ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
আজকের এই প্রযুক্তির যুগে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাথে পরিচিত নয় এমন ব্যক্তি খুজে পাওয়া কষ্টকর হবে। কেননা আজকাল সবাই গুগলের , ফেসবুক এর সাথে পরিচিত। এখন কারো কোনো বিষয় জানতে হলে মানুষ জানে কোথায় যেতে হয়। কারো কোনো প্রোডাক্ট সম্পর্কে কোনো তথ্য জানতে হলে সে গুগলে যায়। এখান থেকেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজটা মূলত শুরু হয়।
আমরা সকলেই মার্কেটিং কি জানি।সহজ ভাষায় বলতে গেলে কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস অন্যের কাছে প্রচার করাকে মার্কেটিং বলে। আর যে বা যিনি এই কাজটা করে তাকে মার্কেটার বলে। আর যে ব্যক্তি এই কাজটা অনলাইনে করে থাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে।
এখন কথা হলো ডিজিটাল মার্কেটিং কি শুধু প্রচার করা। উত্তর হলো না। কেননা শুধু কোনো পন্য বা সার্ভিস অন্যের কাছে প্রচার করা ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ না। ডিজিটাল মার্কেটিং এর এরিয়াটা অনেক বড় অফলাইনে হয়তো শুধু প্রচার করাকে মার্কেটিং বলা যায় কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এ শুধু প্রচার করার মধ্যে সিমাবদ্ধ নয়। এখানে আপনার একটা ব্যবসা চালানোর পোরো প্রক্রিয়াটাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্তরভুক্ত।
একটা ব্যবসা অনলাইনে সফলভাবে চালাতে যত প্রকার কাজ আছে প্রায় অধিকাংশই ডিজিটাল মার্কেটিং এর আওতায় পড়ে। এখন আপনি বলতে পারেন একজন মানুষ কিভাবে এত কাজ করবে বা শিখবে। তার উত্তর হলো আপনাকে সব গুলো কাজ শিখতে হবে না। আপনি যে কোনো একটি ডিমান্ডিং স্কিল শিখে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারবেন। এখন কথা সেই কাজ গুলো কি কি হতে পারে। যেমন একটা ব্যবসাকে অন্যের কাছে পৌছাতে আপনি সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারেন। আবার আপনার সেই পন্য বা সার্ভিস গুলো বিক্রি করার জন্য একটা ওয়েবসাইট দরকার। ঠিক তেমনি কেও যখন গুগলে সার্চ করে তখন যেন আপনার ওয়েবসাইট গুগলে সবার আগে আসে সেই জন্য এস.ই.ও করা। এভাবে আর অনেক ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ আছে। আমরা নিচে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ডিমান্ডিং স্কিল গুলো নিয়ে কথা বলবো এবং সেগুলো কিভাবে শিখে আপনি অনলাইনে ইনকাম করতে পারেন। সর্বশেষ বলবো কোথায় থেকে আপনি ইনকাম করতে পারেন।
তাহলে আর কথা না বলে চলোন শুরু করা যাক।
আমি এখানে যে যে স্কিল গুলো বর্তমান মার্কেটে সবচেয়ে বেশি ডিমান্ডিং এবং কাজ বেশি পাওয়া যায় সেই স্কিল গুলো নিয়ে কথা বলবো। যাতে করে আপনি এই স্কিল গুলো শিখে অনলাইনে ভালো একটা টাকা ইনকাম করতে পারেন।
2. Search Engine Marketing
3. Social Media Marketing
4. Email Marketing
5. Affiliate marketing
6. Google Ads
7. Facebook Ads
8. Youtube Marketing
9. Google Marketing tools
1.website design and development
বর্তমান মার্কেটে এই স্কিলটির চাহিদা প্রচুর। যেহেতু আজকাল অনলাইনে ব্যবসা মানে তার ওয়েবসাইট লাগবেই। প্রত্যেকটি ব্যবসা শুরু করার সময় তার প্রথমে যে জিনিসটি প্রয়োজন সেটি হচ্ছে এই ওয়েবসাইট। তাই এই স্কিলটি শিখতে পারলে আপনি ভালো একটা ইনকাম করতে পারবেন। তাছাড়া একটা ওয়েবসাইট ডেভেলপ বা ডিজাইন করতে আপনাকে যত টাকা দিবে অন্যান্য ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিলে এত টাকা দিবে না। তাই এই স্কিল এর ডিমান্ড বেশি।
আপনি এই স্কিলটি খুব সহজে শিখতে এই কোর্সটি করতে পারেন। ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট এর জন্য এই কোর্সটি খুব সুন্দরভাবে সাজানো আছে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট শিখুন
2. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন একটা ব্যবসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি একটা ওয়েবসাইট ডিজাইন এন্ড ডেভেলপ করেছেন বা আপনার ক্লাইন্টের একটা ওয়েবসাইট আছে। কিন্তু সেখানে কোনো অরগানিক বা গুগল সার্চ রেসাল্ট থেকে কোনো ভিজিটর পাচ্ছে না। তখন তার থেকে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করতে হবে। এটা বর্তমানে খুব বেশি পপুলার কেননা প্রত্যেকে চাই তার ওয়েবসাইট গুগলের প্রথম পেজে আসুক। তাই এই স্কিল শিখে আপনি খুব সহজে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।
3. সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং
আজকাল সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। চলারও কথা কারন লোকজন এখন বাস্তব দুনিয়া থেকে সোশাল মিডিয়াতে সময় বেশি দেয়। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রধান কাজ হলো আপনার ব্যবসাটা অধিকসখ্যক মানুষের কাছে পৌছিয়ে বেশি সেল করা।
তাই অধিকাংশ মানুষ যেহেতু বিভিন্ন সোশাল মিডিয়াতে পাওয়া যাই। তাই সবাই চাই তার ব্যবসাটা আর মানুষের কাছে পৌছাই। এই কাজটা আপনি খুব সহজে শিখতে পারেন। এটা এত এশি কঠিন না। আপনি এখনাকার সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কোর্স আইমান সাদিক ও সাদমান সাদিক এর সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কোর্সটা করতে পারেন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখুন
4.Affiliate marketing
সাধারণত দুটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি এর পরস্পর নিজেদের পণ্যের মার্কেটিং এর করে পণ্য প্রচারের মাধ্যমকে বলা হয় এফিলিয়েট মার্কেটিং। বর্তমানে সকলের নিকট বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই এফিলিয়েট মার্কেটিং। এই মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে দুটি কোম্পানির পারষ্পারিক স্বার্থ জড়িয়ে থাকে।
ধরুন কোন কোম্পানির বা মানুষের প্রচুর পরিমানে ফলোয়ার রয়েছে কিন্তু, তাদের কোনো পন্য নেই। আর আপনার প্রতিষ্ঠান এর পণ্য আছে কিন্তু কোনো ফলোয়ার নেই। এই দুই কোম্পানি বা পক্ষ যদি পারস্পরিক সমঝোতা করে নিজেদের মধ্যে এফিলিয়েশন করে নিতে পারেন তাহলে, দুইপক্ষই লাভবান হবে। বর্তমান সময়ে তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি যদি নিজের কোনো পন্য সেল না করে অন্যের পন্য সেল করে আপনি নিজেই ইনকাম করতে চান তাহলে আপনি এই স্কিলটা জেনে নিতে পারেন। এটাকে স্কিল না বললেও চলে। সামান্য কিছু লজিকাল্ভাবে চিন্তা করে আপনি যদি কোনো অন্যের এফিলিয়েট করেন তাহলে আপনি অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সেই হাক্স গুলো জানতে চান তাহলে এই ৭৫টাকর বইটি পড়তে পারেন। তাহলে আপনিও সব কিছু যেনে আজই এফিলিয়েট শুরু করতে পারেন।
5. Google Ads
অনেকেই গুগল সার্চ রেসাল্টে সবার আগে তাদের ওয়েবসাইট শো করাতে চায়। যাতে করে তাদের সেল বেশি হয়। কেও যখন গুগলে সার্চ করবে কোনো নির্দিষ্ট পন্যের জন্য তখন তাদের ওয়েবসাইট সবার আগে শো করবে। ফলে কাস্টমার সেই ওয়েবসাইটে ভিজিট করে তার কাঙ্কিত পন্য কিনে নেয়। ঠিক এই কারনে সবাই গুগলের পেইড এডভারটাইজ করাতে চায়।
আপনি এই কাজটি খুব কম সময়ে শিখতে পারেন। এটা শিখতে আপনার বেশি সময় ব্যয় করতে হবে না। আর মার্কেটে এই কাজের চাহিদাও অনেক বেশি।
6. Facebook Ads
ঠিক গুগল এডভারটাইজমেন্টের মতো। আজকাল যেহেতু ফেসবুকেও অনেক মানুষ এক্টিভ থাকে সেহেতু মানুষ চায়।সেখান থেকেও তাদের ব্যবসাতে সেল বাড়াতে। অন্যদের কাছে ফেসবুক এড এর মাধ্যমে সহজে পৌছা যায় তাই সবাই এই পথ অনুসরণ করে।
আপনি এই কাজটিও খুব কম সময় ব্যয় করে শিখতে পারেন।
7. Youtube Marketing
আজকাল অনেক ব্যবসা ইউটিউবে চলে আসে তাদের বিভিন্ন পন্যের এডভারটাইজমেন্ট করতে। কারন এখানেও অনেক লোক অ্যাক্টিভ থাকে তাই সকল ব্যবসা চায় তাদের সেল বাড়ুক। তাই তারা ইউটিউবে ও মার্কেটিং করে।
আপনার এই কাজটি শিখতে কয়েকদিন লাগবে।
8. Google Marketing tools
আপনি যদি পেইড এডভারটাইজমেন্ট নাও করে। আপি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যান্য স্কিলগুলো শিখেন তাহলে আপনাকে এই স্কিলটি শিখতেই হবে। আপনি যদি ওয়েবসাইট ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট শিখেন বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন শিখেন তাহলে আপনাকে এই স্কিল শিখতে হবে। অথবা আপনি আপনার নিজের জন্য কোনো ওয়েবসাইট ডেভেলপ করলেন ব্লগিং বা এই টাইপের কোনো কিছু করতে তাহলেও আপনার এই স্কিল লাগবে।
আপনি এই স্কিল খুব সহজে শিখতে পারেন এখান থেকে👉শিখুন
কোথায় কাজ করবো?
এখনকার সময়ে কাজ করার জায়গার অভাব নেই। আপনার শুধুমাত্র কাজটা ভালোভাবে শিখতে হবে। আপনি যদি কাজ পারেন তাহলে আপনার জন্য কাজের অভাব হবে না। তারপরে বলছি। আপনি যদি উপরে উল্লেখিত কাজগুলোর কোনো একটি বা তার চেয়ে বেশি কাজ ভালো ভাবে পারেন তাহলে আপনার এখন ইনকাম করার সময়। আপনি ইন্টারন্যাশনাল বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারেন যেমন ঃ UpWork, Fiverr, PeoplePerHour, Freelancer.com, guru ইত্যাদি। কাজ করার মতো এরকম অনেক মার্কেটপ্লেস আছে। আপনি ঐই মার্কেটপ্লেস গুলোতে একাউন্ট করে কাজ শুরু করতে পারেন। অথবা আপনি চাইলে দেশের কোনো স্টার্টআপ কোম্পানিতে কাজের জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
আরেকটা কথা বলে রাখা ভালো আপনি যখন কাজ শিখা শেষ করবেন তখন আপনি নিজের জন্য একটা পৌরটপলিও তৈরি করে পেলবেন। যেখানে আপনি আপনার স্কিল গুলো শো করাবেন এবং আপনি শিখার সময় যে প্রজেক্টগুলো করেছেন সেগুলো শো করাবেন।
শেষ কথা
জানা এবং অ্যাকশান নেওয়া এক কথা না। আপনি এখন যে বিষয় গুলো জেনেছেন বা শিখেছেন তার কোনো কাজে আসবে না যদিনা আপনি কোনো অ্যাকশান না নেন।
তাই যদি ডিজিটাল মার্কেটিং করে যদি আপনি অনলাইনে ইনকাম করতে চান তাহলে আপনি আজই শুরু করে দিন।
এরকম আর বিভিন্ন শিক্ষনীয় আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন। নতুন আর্টিকেল পাবলিশ হওয়ার সাথে সাথে পেতে আমাদের Telegram Channel এ join করুন।