আপনি যদি ব্লগিং করতে ভালোবাসেন এবং এখান থেকে ইনকাম করে চান। তাহলে এটাই আপনার জন্য সবচেয়ে সেরা সময় ব্লগিং করে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার। আপনি যদি একজন স্টুডেন্ট বা যেকোনো পেশার মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে ব্লগিং জার্নি আপনি খুব কম টাকা খরচ করে শুরু করে দিতে পারেন। ব্লগিং হচ্ছে সবচেয়ে কম টাকার বেশি ডিমান্ডিং ব্যবসা যা করতে আপনার খুব বেশি টাকার ধরকার হবে না। তাছাড়া আপনি যদি কোনো বিষয়ে এক্সপার্ট না হয়েও আপনি ব্লগিং করে ভালো একটা ইনকাম করে পারেন। আমি এই আর্টিকেলের শেষে বলে দেব কিভাবে আপনি কোনো বিষয়ে যদি এক্সপার্ট নাও হন তাহলেও আপনি ব্লগিং করে পারেন।
এখন আপনার মনে হয়তো কিছু প্রশ্ন জাগতে পারে যেমনঃ
- ১। ব্লগিং কি?
- ২।কিভাবে শুরু করা যায়?
- ৩।কত উপায়ে টাকা ইনকাম করা যায়?
- ৪। মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়?
- ৫।ইনকাম করেতে কি কি করতে হবে?
- ৬। কোনো বিষয়ে যদি এক্সপার্ট না হয় তাহলে কি ব্লগিং করা যায়?
উপরের সকল প্রশ্নের উত্তর পেতে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনার সকল উওর পেয়ে যাবেন।
১। ব্লগিং কি?
আমি যদি সহজ ভাষায় আপনাকে বলি। ব্লগিং বলতে আপনার জানা কোনো বিষয়ে অলাইনে লিখালিখি করা। এখন আপনার মনে কিছু কনফিউশন হতে পারে তাহলে তো আমি ফেসবুকে যে পোস্ট দিই তাও তো ব্লগিং। আসলে ব্যপারটা সেরকম না। অনলাইনে যেকোনো জানা বিষয়ের উপর লিখলেই সেটা ব্লগিং হবে না। ব্লগিং হলো আপনাকে একটা সিস্টেম অনুসরণ করতে হবে। আপনি ফেসবুক বা অন্যান্য সোশাল মিডিয়াতে যেকোনো র্যান্ডম বিষয়ে লিখে পেলেন কোনো ধরা বাধা নাই। কিন্তু ব্লগিং অনেক কিছু মেনে চলতে হয় যদি আপনি টাকা ইনকাম করে চান। যেমন আপনি অন্যার লেখা কপি করতে পারবেন না। তাছাড়া সেই লেখা কোনো একটা বিষয়ে হতে হবে। কারো ব্যপারে হেট স্পিচ ছড়াতে পারবেন না।
আপনি এর পরে জানতে পারবেন তাহলে ব্লগিং শুরু করে কি কি লাগে বা জানতে হয়।
২।কিভাবে শুরু করা যায়?
ব্লগিং শুরু করে আপনার বেশি কিছু লাগবে না। প্রথমে আপনি একটা বিষয় নির্ধারণ করবেন যেটাকে নিস বলা হয়। তারপর আপনার একটা ডোমেইন নেম ও হস্টিং লাগবে। ডোমেইন বলতে আপনার ওয়েবসাইটের নাম যেটা আপনি আপনার ব্লগিং বিষয় অনুযায়ী সিলেক্ট করবেন। আর হস্টিং বলতে আপনার ওয়েবসাইটে আপনি যে সকল লেখা, ইমেজ ও ভিডিও পোস্ট করবেন সেগুলো রাখার জায়গা। এই দুইটা জিনিস আপনাকে কিনতে হবে। আপনি এই ওয়েবসাইট থেকে কিনতে পারেন intelwebhost তারা খুব কম দামে ডোমেইন ও হস্টিং বিক্রি করে। আপনি তাদেরকে বিকাশে পেমেন্ট করতে পারবেন।
৩।কত উপায়ে টাকা ইনকাম করা যায়?
একটা প্রপেশনাল মানের ব্লগ দিয়ে আসলে কত উপায়ে যে ইনকাম করা যায় তা বলতে গেলে এই আর্টিকেলটা অনেক বড় হয়ে যাবে। সেই জন্য আপনি আপনাকে সবচেয়ে জনপ্রীয় কিছু উপায় যে গুলো করতে অনেক সহজ ও ইনকাম ও বেশি। সেই রকম কিছু উপায় বলবো আজকে।
১। এড বসিয়ে ইনকাম
এটা মূলত আপনি আপনার ওয়েবসাইটে গুগল বা অন্য কোনো কোম্পানির এড বসিয়ে ইনকাম। আপনি আপনার ওয়েবসাইটে পোস্টে বা বিভিন্ন জায়গায় এড বসিয়ে ইনকাম করবেন। এক্ষেত্রে গুগলের আডসেন্স খুবই জনপ্রীয়। আর আপনি যদি গুগলের এড বসাতে চান তাহলে তাদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। তাহলে তারা আপনাকে তাদের এডসেন্স অ্যাকাউন্ট আপ্প্রভ করবে।
২।অ্যাফিলিয়েট করে ইনকাম
এটা খুব সহজ। আপনি আপনার ওয়েবসাইটে অন্যের কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস অন্যের কাছে বিক্রি করার মাধ্যমে ইনকাম। আপনি যদি কোনো প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন তাহলে তারা আপনাকে একটা কমিশন দিবে সেটা হতে পারে ২০% অথবা ৩০%। আমি আপনাকে বিষয়টা বুঝার জন্য একটা উধাহরণ দিই যেমন আপনি আমার একটা প্রোডাক্ট সেটা হতে পারে মোবাইল। যেটার দাম ৫০০০ হাজার টাকা। এখন আমি যদি আপনাকে বলি আপনি যদি এই মোবাইলটা বিক্রি করতে পারেন তাহলে আমি আপনাকে ৩০% কমিশন দিব। তাহলে ধরেন আপনি এই মোবাইল বিক্রি করলেন তাহলে আপনি পাবেন ৫০০০ - ৩০% = ১৫০০ টাকা আপনি পাবেন। এটাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এখন আপনি অনেক বাংলাদেশি বড় বড় ইকমার্স সাইটের অ্যাফিলিয়েট হয়ে ইনকাম করতে পারেন। যেমনঃ BDShop, Daraz ইত্যাদি। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে এই বইটি পড়তে পারেন👉অ্যাফিলিয়েট সেলস বাড়ানোর ১০১ উপায়
৩। আপনার নিজের কোনো প্রোডাক্ট বিক্রি করে ইনকাম
এখন আপনি চাইলে আপনার নিজের কোনো প্রোডাক্ট সেটা হতে পারে পিসিক্যাল বা ডিজিটাল প্রোডাক্ট।
যেমন আপনি কোনো কাজ পারেন তাহলে আপনি সেটাও সার্ভিস হিসাবে আপনার সাইটে বিক্রি করতে পারেন।
৪। ড্রপশিপিং করে ইনকাম করতে পারেন।
বর্তমান এই ড্রপশিপিং জিনিসটা খুব জনপ্রীয় হয়ে গেছে। ড্রপশিপিং মানে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে যেকোনো বড় বড় সাইটের প্রোডাক্ট বিক্রি করবেন সরাসরি কোনো প্রকার অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক না দিয়ে। যেমন আপনি অ্যামাজনের একটা প্রোডাক্ট সরসরি আপনি কাওকে বিক্রি করবেন কিন্তু আপনার হাতে সেই প্রোডাক্ট নাই। এখন প্রশ্ন করতে পারেন আমি তাহলে কিভাবে থাকে সেই প্রোডাক্টটা পাঠাবো তার উত্তর হলে আপনি যে ব্যক্তি আপনার ওয়েবসাইটে সেই প্রোডাক্টের ক্রয় করেছে সেই ব্যক্তি যে পরিচয় বা ঠিকানা দিয়েছে সেই ঠিকানায় আপনি অ্যামাজনের প্রোডাক্টটা অর্ডার করবেন। এখন বলতে পারেন আমার লাভ কি? আপনার লাভ হলো আপনি আপনার ওয়েবসাইটে সেই প্রোডাক্টের দাম অ্যামাজনের থেকে বেশি দামে বিক্রি করবেন।
এভাবে আপনার হাতে কোনো প্রোডাক্ট নেই কিন্তু আপনি সেই প্রোডাক্টটা বিক্রি করে কিছু ইনকাম করবেন। এটাকে বলে ড্রপশিপিং যা বর্তমানে খুব জনপ্রিয়। আপনি যদি অনলাইনে ইনকাম করার জন্য পরিপূর্ণ গাইডলাইন আছে এমন কোনো কোর্স করতে চান, তাহলে এই কোর্সটি করতে পারেন👉ঘরে বসে Freelancing
৪। মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়?
এই প্রশ্নটা একজনের ক্ষেত্রে একরকম আরেকজনের ক্ষেত্রে আরেকরকম। এটা নির্ভর করে আপনার ওয়েবসাইটে আপনি কত ভিজিটর আনতে পারবেন। আপনি তো আর শুধু শুধু ওয়েবসাইট খুলে আর্টিকেল লিখে ইনকাম করতে পারবেন না। আপনার ওয়েবসাইটে মানুষ আসতে হবে তারপর আপনি ইনকাম করতে পারবেন। তাই এটা নির্ভর করবে আপনার সাইটের ভিজিটর অনুসারে। কিছু মানুষ মাসে ৫-৬ লাখ টাকার বেশি ইনকাম করে আবার কেও মাসে ৩০-৫০ হাজার টাকা ইনকাম করে। সেটা নির্ভর করবে আপনার সাইটের ভিজিটর ও এসইও পারপরমেন্স অনুসারে।
এখন আপনি বলতে পারেন সাইটে কিভাবে ভিজিটর আনবো। একটা সাইটে ভিজিটর আনার ক্ষেত্রে আপনার সাইটে এস.ই.ও অনেক ভুমিকা পালন করে। তাই আপনি আপনার সাইটকে এসইও করবেন। জাতে আপনি গুগল থেকে সার্চ এর মাধ্যমে অরগানিক ট্রাপিক বা ভিজিটর পান।
আপনি যদি এস ই ও ভালোভাবে শিখতে চান তাহলে ১০মিনিট স্কুলের এই কোর্সটি করতে পারেন।👉SEO Course for Beginners। খুব ভালো একটা কোর্স। আপনি এই কোর্সটা করে চাইলে সার্ভিস হিসাবে এটা আপনি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে বা আপনার ওয়েবসাইটে মানুষকে প্রোবাইড করতে পারেন। যেটার মাধ্যমেও আপনার ভালো একটা ইনকাম হবে।
৫।ইনকাম করেতে কি কি করতে হবে?
আগেও কিছুটা বলেছি। আপনি যদি আপনার সাইট থেকে ইনকাম করতে চান তাহলে আপনাকে আপনার সাইটে ভিজিটর আনতে হবে সেটা হোক সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে বা গুগলের মাধ্যমে।
আর একটা সাইটে ভিজিটর পেতে এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের ভুমিকা অনেক। সেই জন্য আপনি ১০ মিনিট স্কুলের এই এসইও কোর্সট করতে পারেন 👉
SEO Course for Beginners।
৬। কোনো বিষয়ে যদি এক্সপার্ট না হয় তাহলে কি ব্লগিং করা যায়?
সর্বশেষ এই প্রশ্নটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অনেকের এই প্রশ্নটা থাকার কথা। আপনি বলতে পারেন আমিতো কোনো নির্দিষ্ট কাজের এক্সপার্ট না বা আমার জানা নেই তাহলে কি আমি ব্লগিং করতে পারবো?
উত্তরে বলবো হ্যাঁ। কারণ যারা অনলাইনে লিখালিখি করে তারা সেই বিষয়য়ে এক্সপার্ট এমন লোক হয়তো হাতে গুনা কয়েকজন হবে। প্রত্যেকেই কোনো বিষয়ে লিখার আগে গুগল করে বা বিভিন্ন রিসোর্স পড়ে সেই বিষয়ে লিখতে আসে। তাই আপনিও যদি কোনো বিষয়ে লিখতে চান তাহলে আপনার একটা বিষয় জানতে হবে সেটা হচ্ছে গুগলে সার্চ করে আপনি যে বিষয় সম্পর্কে লিখতে চাচ্ছেন সেই বিষয় সম্পর্কে কিছু পড়ালেখা করে আপনি নিজের মতো করে সহজ ভাষায় লিখবেন।
শেষ কথা
আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে যে বিষয়গুলো বলেছি সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখে যদি ব্লগিং শুরু করেন, তাহলে আপনি একটি ভালো ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারবেন। আসলে জানা বড় কথা নয়। বরং সেই অনুযায়ী কাজ করা অনেক বড় বিষয়। এখন আপনি কিভাবে অনলাইনে ব্লগিং করে ইনকাম করা যায় সেটা জানেন কিন্তু আপনি সেটা করলেন না। তাহলে আপনার সেই জানা বা শিখার কোনো কাজে আসলো না।
এই রকম আরো বিভিন্ন গাইডলাইনে ভিত্তিক আর্টিকেল পেতে আমাদের বিভিন্ন সোশাল মিডিয়াতে সংযুক্ত থাকুন।