চোখের গুনাহ থেকে বাঁচার উপায়
মানুষের অধিকাংশ গুনাহ শুরু হয় চোখের মাধ্যমে। তাই ইসলামে নজর হেফাজত করা
গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসে অবৈধ জিনিসের প্রতি দৃষ্টিপাতকে জিনা বা ব্যভিচার বলা
হয়েছে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘চোখের জিনা ও ধর্ষণ হলো হারাম দৃষ্টি।’
(বুখারি : ৬৬১২)।
অবৈধ ও নিষিদ্ধ দৃষ্টিপাত সম্পর্কে নবীজি (সা.) কড়া
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘তোমার অনুমতি ছাড়া কেউ যদি তোমার ঘরের ভেতর তাকায়
আর তুমি কঙ্কর মেরে তার চোখ ফুটো করে দিয়ে থাকো, এতে তোমার কোনো দোষ হবে না।’
(বুখারি : ৬৮৮৮)
এ থেকে বোঝা যায়, একে অপরের যেকোনো গোপনীয় বিষয়ে
দৃষ্টিপাত থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। এ হিসেবে নারী-পুরুষ পরস্পরের সতরের দিকে
তাকানো নিষেধ। পুরুষের সতর নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত। নারীর সতর মাহরামদের সামনে
মুখাবয়ব, হাতের কবজি এবং পায়ের টাখনু ছাড়া বাকি দেহ। আর গায়রে মাহরামের সামনে
পূর্ণ শরীর। কারও ঘরের ভেতর সদর দরজা, জানালা ইত্যাদি দিয়ে দৃষ্টি দেওয়া নিষেধ।
কারও ব্যক্তিগত কোনো তথ্যের প্রতি দৃষ্টিপাত নিষেধ। কারও মোবাইলের মেসেজ, ইনবক্স
ও গ্যালারি ইত্যাদি দেখা নিষেধ। কারও ব্যক্তিগত কাগুজে চিঠিপত্র দেখা নিষেধ।
পরীক্ষার হলে একে অপরের খাতা দেখা নিষেধ। দৈনন্দিন জীবনে এরকম আরও অনেক বিষয়
রয়েছে, যা হারাম ও নিষিদ্ধ হওয়া সম্পর্কে সামান্য চিন্তা করলেই বুঝে আসে।
অবৈধ
দৃষ্টিপাত থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে আল্লাহ তায়ালা বলেন,‘আপনি মুমিন পুরুষদেরকে
বলুন, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।
এটাই তাদের জন্য উত্তম। তারা যা করে আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবগত এবং ঈমানদার
নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের
হেফাজত করে। তারা যেন (দেহের) যা সাধারণত প্রকাশ থাকে, তা ব্যতীত তাদের
রূপ-সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার ওড়না দ্বারা
আবৃত করে। তারা যেন তাদের স্বামী, বাবা, শ্বশুর, ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই,
ভাতিজা, ভাগিনা, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌনকামনা
রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারও কাছে তাদের
রূপ-সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে
সজোরে পদক্ষেপ না করে। হে ঈমানদারগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করো।
যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ (সুরা নূর : ৩০-৩১)। বিখ্যাত বুজুর্গ জুনাইদ বাগদাদী
(রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, হারাম দৃষ্টি থেকে বাঁচার উপায় কী? তিনি বলেছিলেন,
‘সর্বদা এ কথা মনে রাখা যে, তুমি হারামের দিকে দৃষ্টিপাত করার আগে আল্লাহর দৃষ্টি
তোমার ওপর রয়েছে।’ (জামেউল উলুম ওয়াল হিকাম : ১/৪০৯)
আপনি যদি প্রতিটি
নতুন বই সবার আগে পেতে চান, তাহলে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপের সাথে যুক্ত থাকুন
👉👉
Join করুন