বইটির ডাউনলোড লিংক নিচে দেওয়া আছে
আপনি এমন সম্প্রদায়ের ব্যাপারে আশ্চার্যান্বিত হবেন যে, যারা রাসূল (সাঃ)-এর নিম্নোক্ত বাণী সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত বলা জানে। إِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُوْرِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ وَكٌلَّ ضَلاَلَةٍ فِي النَّارِ ‘ধর্মের নামে নতুন সৃষ্টি হ’তে তোমরা সাবধান। কেননা প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিই বিদ‘আত এবং প্রত্যেক বিদ‘আতই হচ্ছে ভ্রষ্টতা। আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতাই তোমাকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে’।[1]
তারা আরো জানে যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর বাণী كُلَّ بِدْعَةٍ ‘সকল বিদ‘আত’ বাক্যাংশটি পূর্ণাঙ্গতা জ্ঞাপক, ব্যাপক, পরিব্যাপ্ত এবং পূর্ণাঙ্গ ও ব্যাপক অর্থবাচক শব্দ كُلَّ দ্বারা পরিবেষ্টিত আছে। আর যিনি এই ব্যাপক অর্থবাচক শব্দ উল্লেখ করেছেন তিনি রাসুল (সাঃ) এর মর্ম ভালো করে জানতেন।
তিনি সৃষ্টি জগতের মধ্যে সবচেয়ে বিশুদ্ধভাষী এবং সৃষ্টিজগতের মধ্যে সৃষ্টির অধিকতর কল্যাণকামী ছিলেন। তিনি এমন কোন বক্তব্য দিতেন না, যার কোনো অর্থ-উদ্দেশ্য থাকত না বলা ছিল না। তাই যখন তিনি বলেছিলেন, كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ ‘প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা’, তখন তিনি জানতেন যা তিনি বলতেছিলেন। আর তিনি যা বলতেছিলেন তার অর্থও তিনি জানতেন। তাঁর এই বাণী জাতির জন্য পূর্ণাঙ্গ উপদেশ হিসাবেই এই কথা তাঁর মুখ থেকে বের হয়েছিল।
যখন উল্লিখিত বাক্যে এই তিনটি বিষয় পূর্ণ হ’ল (১) ইচ্ছা ও কল্যাণ কামনার পূর্ণতা (২) বিবরণ ও বিশুদ্ধতার পূর্ণতা এবং (৩) জ্ঞান ও অবগতির পূর্ণতা, তখন তা প্রমাণ করে যে, সেখানে যে অর্থ হওয়া যথার্থ ছিল সেটিই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। তাহ’লে এই পূর্ণাঙ্গবাচক শব্দ ব্যবহারের পরেও বিদ‘আতকে তিন প্রকার বা পাঁচ প্রকারে বিভক্ত করা কি আদো ঠিক হবে? এটা কখনোই ঠিক হবে না বলা হচ্ছে না। আর কিছু আলেম দাবী করে যে, ‘বিদ‘আতে হাসানা’ নামে একটি বিদ‘আতও আছে। তাদের এ দাবী দু’টি আসলে এই অবস্থা থেকে মুক্ত নয়।
(১) কর্মটি আসলে বিদ‘আত নয়, কিন্তু সে এটাকে বিদ‘আত ধারণা করে।
(২) সেটা মূলতঃ বিদ‘আত ও ঘৃণিত বিষয়। কিন্তু সে তার খারাবী সম্পর্কে অবগত নয়।
সুতরাং যে বিদ‘আতকে হাসানা দাবী করা হবে এটাই তার জন্য বিপক্ষে উত্তর। এর উপর ভিত্তি করে বলা যায় যে, আমাদের হাতে রাসূল (সাঃ)-এর মুখনিঃসৃত ধারাল তরবারী সদৃশ্য বাণী كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ ‘প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা’থাকা অবস্থায় বিদ‘আতীদের জন্য এ কথা বলার কোন সুযোগ নেই যে, বিদ‘আতের একটা প্রকার হ’ল বিদ‘আতে হাসানা। এই ধারালো তরবারীটি রিসালাত ও নবুওয়াতের কারখানা দ্বারা নির্মিত হয়েছে। কোন দুর্বল কারখানা দ্বরা এইটি নির্মিত হয়নি। আর এ অলংকারপূর্ণ রূপদান করেছেন স্বয়ং রাসুল সাঃ। সুতরাং যার হাতে এরূপ ধারাল তরবারী আছে, বিদ‘আতে হাসানা বলে কেউ তার মুকাবেলা করতে সক্ষম হবেন না। কারণ রাসূল সাঃ বলেছেন, كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ ‘প্রত্যেক বিদ‘আতই হচ্ছে ভ্রষ্টতা’।
আমি যেন অনুভব করছি যে, আপনাদের অন্তরে একটা প্রশ্ন উঁকি দিয়ে বলছে, সত্যের অনুগামী আমীরুল মুমিনীন ওমর ইবনুল খাত্ত্বাবের ব্যাপারে আপনি কি বলবেন, যখন তিনি উবাই ইবনে কা‘ব ও তামীম আদ-দারীকে এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, তারা যেন রামাযান মাসে লোকদেরকে তারাবীর ছালাত জামা‘আতের সাথে পড়ায়। অতঃপর যখন লোকেরা তাদের ইমামতিতে জামা‘আতে তারাবীর ছালাত আদায় করছিল, তখন তিনি বের হয়ে বলেছিলেন, نِعْمَ الْبِدْعَةُ هَذِهِ، وَالَّتِى يَنَامُوْنَ عَنْهَا أَفْضَلُ مِنَ الَّتِىْ يَقُوْمُوْنَ ‘এ নতুন পদ্ধতিটি কতইনা সুন্দর! আর যারা এ ছালাত হ’তে ঘুমাচ্ছে তারা এই ছালাতে (বিচ্ছিন্নভাবে) দন্ডায়মানদের থেকে অনেক উত্তম’।[2]
দুই ভাবে এটির উত্তর প্রদান করা যায়-
(১) কোন মানুষের জন্য কারো কোন কথা দ্বারা রাসূল সাঃ -এর বাণীর বিরোধিতা করা কোনক্রমেই বৈধ নয়। এমনকি নবী সাঃ-এর পরে উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি আবূবকর, উম্মতের দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি ওমর, উম্মতের তৃতীয় শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি ওসমান ও উম্মতের চতুর্থ শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি আলী (রাঃ)-এর উক্তির মাধ্যমেও নয়। তারা ব্যতীত অন্য কারো উক্তির দ্বারাও রাসূল (ছাঃ)-এর উক্তির বিরোধিতা করা কোনক্রমেই যাবে না। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فَلْيَحْذَرِ الَّذِيْنَ يُخَالِفُوْنَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيْبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيْبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ ‘সুতরাং যারা তার আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা যেন সতর্ক হয় যে, বিপর্যয় তাদের উপর আপতিত হবে অথবা আপতিত হবে তাদের উপর মর্মন্তুদ শাস্তি’ (নূর ২৪/৬৩)।
ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেন, أتدري ما الفتنة؟ الفتنة الشرك لعله إذا رد بعض قول النبي صلى الله عليه وسلّم أن يقع في قلبه شيء من الزيغ فيهلك ‘তুমি কি জান ফিতনা কি? ফিতনা হচ্ছে শিরক। সম্ভবত কেউ যখন রাসূল (ছাঃ)-এর কোন হাদীছ প্রত্যাখ্যান করে, তখন তার হৃদয়ের মধ্যে সৃষ্টি হয় ভ্রষ্টতা। ফলে সে ধ্বংস হয়ে যায়’।[3]
ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, يوشك أن تنزل عليكم حجارة من السماء أقول قال رسول الله صلى الله عليه وسلّم وتقولون قال أبو بكر وعمر ‘আশংকা হয় যে, আকাশ থেকে তোমাদের উপর পাথর নিক্ষেপ করা হবে। আমি বলছি যে, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আর তোমরা বলছ, আবূবকর ও ওমর (রাঃ) বলেছেন।[4]
(২) আমরা নিশ্চিতভাবে জানি যে, আমীরুল মুমিনীন ওমর (রাঃ) আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাঃ-এর বাণীকে সম্মান করার ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কঠোর ছিলেন। তিনি আল্লাহর নাযিলকৃত দন্ডবিধি সম্পর্কে অবগতির ব্যাপারে অনেক প্রসিদ্ধ ছিলেন। এমনকি তিনি আল্লাহর বাণীর নিকট আত্মসমপর্ণকারী হিসাবে স্মধিক পরিচিত ছিলেন। আর মোহরের সীমা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে অভিযোগ উপস্থাপনকারিনী নারীর ঘটনাটি যদি ছহীহ হয়, যেটি অনেকের কাছেই অপরিচিত ছিলো। মহিলাটি আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণী দ্বারা তাঁর বিরোধিতা করেছিলো। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَكَيْفَ تَأْخُذُوْنَهُ وَقَدْ أَفْضَى بَعْضُكُمْ إِلَى بَعْضٍ وَأَخَذْنَ مِنْكُم مِّيْثَاقاً غَلِيْظًا ‘আর কিরূপে তোমরা ওটা গ্রহণ করবে যখন তোমরা একে অপরের সঙ্গে সংগত হয়েছ এবং তারা তোমাদের নিকট হ’তে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি নিয়েছে’ (নিসা ৪/২১)......
আরো অশঙ্ক বিষয় বিদআত সম্পর্কে জানতে বইটি সম্পূর্ণটাই পড়োন আশা করি আপনি এই বইটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন যেগুলি সত্যিই আপনার জানার প্রয়োজন বিশেষ করে বিদআত সম্পর্কে আমাদের জীবনে অনেক বেশি সতর্ক হওয়া দরকার সেই দৃষ্টিকোন থেকে এই বইটি আপনাকে অনেক বেশি সাহায্য করবে সুতারং আর দেরি না করে বইটি একনি ডাউনলোড করে পেলোন নিচের লিঙ্কটি ক্লিক করে।
মাশাআল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ ভালো উপহার দেওয়া হয়েছে।
ReplyDelete